মাত্রাতিরিক্ত চা খেলে কি ক্ষতি হয়?
আমরা সবাই প্রায় দিনের শুরুতেই চাই এক কাপ গরম চা। সারা দিনে একবারও চা খান না, এমন মানুষের সংখ্যাটা বোধহয় হাতে গোনা। আবার এমনও অনেকে আছেন যাদের সারাদিনে অন্ত৭-৮ কাপ চা না খেলে চলে না। দুধ চা হোক বা আদা দেওয়া সুগন্ধী পাতার লাল চা, চায়ের নেশাটা কম-বেশি প্রায় সকলেরই রয়েছে। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, মাত্রাতিরিক্ত চা খাওয়ার অভ্যাস ডেকে আনতে পারে মারাত্মক বিপদ। কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ এমনকি প্রস্টেট ক্যান্সার বা মূত্রথলির ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে অতিরিক্ত চা পানে।
মাত্রাতিরিক্ত চা খেলে যেসব বিপদ হয়
১. চায়ের মধ্যে থাকা যে ক্যাফেইন তা একদিকে যেমন তড়তাজা করে তোলে, তেমনই অতিরিক্ত চা খেলে বাড়ে শরীর অস্থিরতা শুরু হয়।
২. রাত ৮টার পর চা না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এতে করে ব্যাঘাত ঘটতে পারে ঘুমে।
৩. চায়ে থাকা থিওফাইলিন নামের রাসায়নিক পরিপাকের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাধা দান করে। বদহজমও এরসাথে আরো সমস্যা হতে পারে।
৪. অনেকে ডাক্তারই গর্ভাবস্থায় চা বা কফি বেশি না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ, চায়ে থাকা ক্যাফেইন গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে ধরা হয়।
৫. হার্টের সমস্যা থাকলে যতটা সম্ভব কম চা খাওয়াই ভালো।
৬. অনেকেই আবার দাবি করে থাকেন যে, অতিরিক্ত মাত্রায় চা খেলে পুরুষদের প্রস্টেট ক্যান্সার বা মূত্রথলির ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, সামাণ্য পরিসমাণ কালো চা পান করা সবসময়ই উচিত। প্রতিদিন প্রায় ৪ কাপ ব্ল্যাক টি খেলে তা মানুষের জন্য নিরাপদ। কিন্তু তার বেশি ও ঘণ্টায় ঘণ্টায় যদি চা পানের নেশা থাকে তাহলে তা সত্যিই চিন্তার বিষয়। এর কারণ অতিরিক্ত কালো চা খেলে শরীরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন প্রবেশ করে, যা একেবারেই নিরাপদ নয়। এছাড়া পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। এতে মাথাব্যথা , হার্টরেটে গণ্ডগোল ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের প্রবণতা তৈরি হয়। তাই ব্ল্যাক টি খাওয়ার আগে দুবার ভাবনা চিন্তা করা উচিত।
কালো চায়ে রয়েছে ট্যানিন যার কারণে লালচে ও বাদামি রঙের লিকার হয়ে থাকে। এর স্বাদ বেশ কষা ও তেতো প্রকৃতির হয়ে থাকে। ট্যানিন হল গাছের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য ভাল, কিন্তু আপনি যদি দিনে ১০ বার ব্ল্যাক টি পান করেন তাহলে শরীরে মারাত্মকভাবে আয়রন প্রবেশ করে। যার ফলে শরীরের ভিতর কষে যেতে পারে।আয়রনের ঘাটতিতে রক্তাল্পতার কারণ হতে পারে। ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডে প্রভাব পড়ে তাতে। অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত হৃদস্পন্দন, হার্ট ফেলিওর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এমনকি পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত পাম্প করতেও অক্ষম হয়ে পড়ে মানুষ।
ধন্যবাদ সবাইকে